আইন পেশায় ক্যারিয়ার গড়তে যা যা করণীয়ঃ
কোথায় কীভাবে শুরু করবেন?
*******************************
প্রথমে আপনাকে এইচএসসি পাসের পর যে কোনো সরকারি অথবা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন অনুষদে ভর্তি হতে হবে। এখানে আপনাকে চার বছরমেয়াদি এলএলবি অনার্স সম্পন্ন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে যেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, , রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়,জাহাঙ্গীরনগর ও কুষ্টিয়া ইসলা্মি বিশ্ববিদ্যালয়সহ যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। আপনি ইচ্ছা করলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারেন। আর বাংলাদেশের প্রায় সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনের জন্য এলএলবি অনার্স কোর্স চালু আছে। এখানে পড়তে হলে প্রতিষ্ঠানভেদে খরচ পড়বে ৩ থেকে ৫ লাখ টাকা। এছাড়া আপনি চার বছর মেয়াদি এলএলবি না করেও আইন পেশায় আসতে পারেন। এ জন্য আপনাকে যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় অথবা কলেজ থেকে অনার্স বা ডিগ্রি পাস করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়য়ের অধীনে যে কোনো ল’ কলেজে দু’বছর এলএলবি (পাস) কোর্স করতে হবে। এখানে আপনার খরচ পড়বে বিশ থেকে পঁচিশ হাজার টাকা। এছাড়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও পড়া যায়। এখানে খরচ পড়বে ৮০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা।
সুযোগ সুবিধা:
**************
আপনাকে এলএলবি অনার্স শেষে বার কাউন্সিল সনদ গ্রহণ করে সিএমএম জজকোর্ট, হাইকোর্ট ও সুপ্রিমকোর্টের জন্য আলাদা আলাদা বারের সনদ গ্রহণ করতে হবে। সনদ পাওয়ার জন্য প্রথমে বার কাউন্সিলের ফরমে আবেদন করতে হবে। এরপর তিন ধাপে তথা এমসিকিউ। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। এলএলবি অনার্স ও এলএলবি (পাস) কোর্সের পর জেএসসি অর্থাৎ জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশন ও সহকারী জজ নিয়োগ পরীক্ষা দিতে পারবেন। এছাড়া আইনজীবী হতে চাইলে এলএলবি বা এলএলবি(অনার্স) অথবা এলএলএম পাশ করেই বাংলাদেশ বার কাউন্সল থেকে সনদপ্রাপ্ত হয়ে যে কোন আইনজীবী সমিতির সদস্য হয়ে সরাসরি আইনজীবী হয়ে যেতে পারেন।
আয়-রোজগার:
***************
জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট বা সহকারী জজ পদে নিয়োগ পেলে সর্বোচ্চ
সম্মান, বিবিধ সুবিধা সহ মোটা অংকের মাইনে তো আছেই।
আইনজীবী হলে আয়-রোজগারের বিষয়টি অভিজ্ঞতা, ব্যক্তিগত দক্ষতা, সামাজিক যোগাযোগ ও মামলার ধরনের ওপর নির্ভর করে। এ ব্যাপারে সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মঈনউদ্দীন ফারুকী জানান, হাইকোর্ট অথবা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীদের মাসিক আয় মামলার ধরন অনুযায়ী ৫০ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত। আইন পেশায় সদ্য যোগদানকারী আইনজীবী আবুল কাশেম জানান, একজন নতুন আইনজীবী সাধারণত ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা আয় করে থাকেন।
আরও চাকরি:
**************
একজন আইনজীবী আইন পেশার পাশাপাশি যে কোনো কোম্পানির লিগ্যাল অ্যাডভাইজার, যে কোনো ব্যাংকের নিজস্ব আইনজীবী অথবা জাতীয় বা আন্তর্জাতিক কোনো সংস্থার আইন উপদেষ্টা হিসেবে চাকরি করতে পারেন। আইন কমিশনেও চাকরির সুযোগ আছে। এখানে আয় ও সম্মান উভয়টি ভালো মানের। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট দিলরুবা সরমিন জানান, বর্তমানে ব্যাংক, বীমা ছাড়াও বিভিন্ন মার্কেট ও বিউটি পার্লারসহ ছোট বড় প্রায় সব প্রতিষ্ঠানে লিগ্যাল অ্যাডভাইজার নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। এতে একজন আইনজীবীর কাজের পরিধি সম্প্রসারিত হচ্ছে। বাড়ছে আয়ের ক্ষেত্র।
স্কলারশিপ:
************
আইন পেশায় উচ্চতর ডিগ্রি নেয়ার জন্য আপনি বাংলাদেশের স্বীকৃত কোনো বিশ্ববিদ্যালয় অথবা আন্তর্জাতিক সংস্থা যেমন- সার্ক, কমনওয়েলথ, আইডিবি, ব্রিটিশ কাউন্সিল, আগাঁখান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট থেকে স্কলারশিপ নিয়ে লন্ডনে ব্রিটিশ কাউন্সিলে বার-এট-ল অর্থাৎ ব্যারিস্টারি করতে পারবেন। ব্যারিস্টারি করতে হলে আপনাকে লন্ডন বার কাউন্সিলের সনদ নিতে হবে। স্কলারশিপের জন্য আপনাকে জাতীয় অথবা আন্তর্জাতিক স্কলারশিপ বৃত্তি অফিসে যোগাযোগ করতে হবে। সুতরাং অন্যান্য পেশার চেয়ে আইন পেশা অনেক লাভজনক ও সম্মানজনক। আইন পেশায় গড়ুন আপনার স্বপ্নের সফল ক্যারিয়ার॥