Monday 17 August 2015

বন্ধুরা আসুন জেনে নেই বাংলাদেশ থেকে ব্যারিস্টার হওয়ার প্রস্তুতি কোথায় এবং কীভাবে?

বন্ধুরা আসুন জেনে নেই বাংলাদেশ থেকে ব্যারিস্টার হওয়ার প্রস্তুতি কোথায় এবং কীভাবে?


আইন শব্দকোষ-এ ব্যারিস্টার শব্দের ব্যাখ্যা করা হয়েছে এভাবে, ইংল্যান্ডের ইনস অব কোর্টের তালিকাভুক্ত ছাত্র হিসেবে কাউন্সিল অব লিগ্যাল এডুকেশনের শিক্ষাক্রম অনুযায়ী অধ্যয়ন ও প্রশিক্ষণ সমাপ্ত করে সনদপ্রাপ্ত যারা। যুক্তরাজ্য বা অস্ট্রেলিয়ার আইনজীবীকে বলা হয় ব্যারিস্টার। ব্যারিস্টার অ্যাট-ল সংক্ষেপে বার অ্যাট-ল। ব্যারিস্টার হতে হলে যুক্তরাজ্যের আইনের ওপর পড়াশুনা করতে হবে। এ জন্য ইংল্যান্ডে নয় মাসের একটি বার প্রফেশনাল ট্রেনিং কোর্স (সংক্ষেপে বিপিটিসি) করতে হয়। এই কোর্সের সফল সমাপ্তি শেষে পাওয়া যায় ইংল্যান্ড বার কাউন্সিলের স্বীকৃতি ও সনদ। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের আইনজীবীদের বলা হয় অ্যাডভোকেট। আমেরিকাতে আইনজীবীকে বলা হয় অ্যাটর্নি। তেমনি করে যুক্তরাষ্ট্রের বা অস্ট্রেলিয়ার আইনজীবীকে বলা হয় ব্যারিস্টার। এভাবে বিভিন্ন দেশে আইনজীবীকে বিভিন্ন নামে অভিহিত করা হয়। আমাদের ঔপনিবেশক দেশ যুক্তরাজ্য হবার কারণে এবং স্বাধীন বাংলাদেশ সত্ত্বেও ঔপনিবেশক মন স্বাধীন না হবার কারণে বাংলাদেশে ব্যারিস্টারকে অত্যন্ত সম্মানের চোখে দেখা হয়। ব্যারিস্টার হওয়ার যোগ্যতা কোনো শিক্ষার্থী এইচএসসি কিংবা A লেভেল পাশ করে সরাসরি যুক্তরাজ্যে ব্যারিস্টারি পড়াশুনা করার জন্য চলে যেতে পারে। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীকে আইনের বিষয়ে প্রথমে ৩ বছরের গ্র্যাজুয়েশন কোর্স সম্পন্ন করতে হবে। এরপর তাকে ৯ মাসের Bar Vocational করতে হয়। এই Bar Vocational করা শেষ হলে তিনি ব্যারিস্টার হিসাবে গণ্য হবেন। যুক্তরাজ্যে পড়াশুনা করতে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের জন্য ভর্তি সংক্রান্ত সকল সহায়তাদানকারী সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান হলো British Council (ব্রিটিশ কাউন্সিল)। তবে বর্তমানে বাংলাদেশ থেকেও আইনের ওপর গ্র্যাজুয়েশন কোর্স করা যায়। বাংলাদেশে তিন বছরের গ্র্যাজুয়েশন কোর্স সম্পন্ন করে যুক্তরাজ্য গিয়ে ৯ মাসের Bar Vocational Course করা যায়। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীকে অবশ্যই আইনের উপর গ্র্যাজুয়েশন কোর্সে ৫৫% মার্ক পেতে হবে এবং IELTS এ প্রতিটি ক্ষেত্রে (Reading, Writing, Speaking, Listening) আলাদাভাবে ৭.৫ পেতে হবে। কোনো শিক্ষার্থী যদি বাংলাদেশ থেকে ইতোমধ্যে আইন বিষয়ে ৪ বছরের স্নাতক কিংবা স্নাতকোত্তর করা থাকে সেক্ষেত্রে তাকে গ্র্যাজুয়েশনের ১২টি কোর্সের পরিবর্তে ৯টি কোর্স করতে হয় এবং ২ বছরে ৯টি কোর্স সম্পন্ন করা সম্ভব। তারপর যথারীতি ৯ মাসের Bar Vocational কোর্স যুক্তরাজ্যে করতে হয়। বাংলাদেশে Bar Vocational Course করা সম্ভব নয়। বাংলাদেশে শুধু তিন বছর বা ২ বছর মেয়াদের গ্র্যাজুয়েশন কোর্স করা যায়। ব্যারিস্টার হতে হলেই বার প্রফেশনাল ট্রেনিং কোর্স করতে হবে। কিন্তু এই কোর্সে সরাসরি ভর্তি হওয়া যায় না। ভর্তি হতে চাইলে প্রথম শর্ত হলো তাঁকে আইইএলটিএস করতে হবে। দ্বিতীয় শর্ত হলো, নিচের তিন যোগ্যতার যেকোনো একটি থাকতে হবে : ১. কোনো ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয় বা তার অধিভুক্ত কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ন্যূনতম দ্বিতীয় শ্রেণির এলএলবি (সম্মান) পাস হতে হবে। ২. কোনো ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয় বা স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান থেকে আইনে অনার্স ডিগ্রিধারী কারও যদি তৃতীয় শ্রেণি থাকে, তবে তাঁকে কোনো ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয় বা তার অধিভুক্ত কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে দ্বিতীয় শ্রেণিসহ এলএলএম (মাস্টার্স) পাস করতে হবে। ৩. ইংল্যান্ডের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা স্বীকৃত কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে কেউ যদি অন্য কোনো বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন, তবে তাঁকে নয় মাসের আরেকটি কোর্স সমপন্ন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে অনার্স ডিগ্রিধারীদের উল্লিখিত প্রথম যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয় বা স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেউ অনার্স পাস করলে (যে বিষয়ই হোক), বার প্রফেশনাল ট্রেনিং কোর্সে ভর্তি হতে হলে তাঁকে আবার নতুন করে কোনো ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয় বা স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান থেকে আইন বিষয়ে অনার্স করতে হবে। তবে এ ক্ষেত্রে মাস্টার্স ডিগ্রিধারীরা একটা বিশেষ সুবিধা পান, তা হলো, তাদের অনার্সের মোট ১২টি বিষয়ের মধ্যে তিনটি বিষয় কম পড়লেই চলে। বার এট ’ল ডিগ্রি লাভে সহায়তাদানকারী বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান : বাংলাদেশের বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান থেকে ব্যারিস্টারি করার জন্য গ্র্যাজুয়েশন কোর্স করা যায়। যেখানে ইংল্যান্ডের পাঠ্যক্রম অনুযায়ী আইন পড়ানো হয়ে থাকে। ব্রিটিশ স্কুল অব ’ল, ভূঁইয়া একাডেমি, নিউ ক্যাসেল ’ল একাডেমি, লন্ডন কলেজ লিগ্যাল স্টাডিজ (এলসিএলএস) প্রভৃতি। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ইংল্যান্ডের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে অভিন্ন প্রশ্নপত্রে একই সময়ে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে থাকেন। তাঁদের উত্তরপত্রের মূল্যায়নটাও হয় ইংল্যান্ডে। এসব স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান থেকে আইনে অনার্স পাস করার পর ইংল্যান্ডে সরাসরি বার প্রফেশনাল ট্রেনিং কোর্সে ভর্তি হওয়া যায়। এইচএসসি বা সমমানের ডিগ্রিধারী যে কেউ এসব প্রতিষ্ঠানে তিন-চার বছর মেয়াদি এলএলবি (সম্মান) কোর্সে ভর্তি হতে পারেন। সে ক্ষেত্রে এসএসসি ও এইচএসসি মিলে তাঁদের জিপিএ ৫ থাকতে হবে। অবশ্য এসব প্রতিষ্ঠানে পড়ার নির্দিষ্ট কোনো বয়সসীমা নেই। ইংল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন আর ইউনিভার্সিটি অব নর্দামব্রিয়া দূরশিক্ষণ পদ্ধতিতে ব্রিটিশ ডিগ্রি নেওয়ার সুযোগ দেয়। তবে ঘরে বসে ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয় বা স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান থেকে আইন বিষয়ে অনার্স করা গেলেও নয় মাসের বার প্রফেশনাল ট্রেনিং কোর্সের জন্য ইংল্যান্ডে যেতেই হবে। খরচ : Bar at Law সম্পন্ন করতে সম্ভাব্য ব্যয় হতে পারে ৩০ লাখ থেকে ৭০ লাখ পর্যন্ত। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানভেদে বার প্রফেশনাল ট্রেনিং কোর্সের টিউশন ফি বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১৫ লাখ ৪৬ হাজার থেকে ১৫ লাখ ৭৯ হাজার টাকা (১৪ হাজার ২০০ থেকে ১৪ হাজার ৫০০ পাউন্ড)। ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের এলএলবি (অনার্স) ডিগ্রিটা যদি ঘরে বসে নিতে চান, তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি ও বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের টিউশন ফি বাবদ কমপক্ষে ১৯ থেকে ২০ লাখ টাকা লাগবে। ইংল্যান্ডে গিয়ে নিতে চাইলে শুধু টিউশন ফি বাবদ লাগবে ২৬ থেকে ৫৬ লাখ। থাকা-খাওয়া-যাতায়াত খরচ মাসে কমপক্ষে ৪৪ থেকে ৬৫ হাজার টাকা (৪০০ থেকে ৬০০ পাউন্ড)। তাতে দেশে বসে নেওয়া একটা বার অ্যাট-লর ক্ষেত্রে খরচ পড়বে ৪০ থেকে ৪৪ লাখ টাকা। আর ইংল্যান্ডে গিয়ে পড়তে চাইলে পড়বে ৬৩ লাখ থেকে এক কোটি টাকার মতো। কেউ যদি ব্যারিস্টারি ডিগ্রি অর্জন করে বাংলাদেশে আইন পেশায় নিয়োজিত হতে চায় সেক্ষেত্রে তাকে বার কাউন্সিলের পরীক্ষায় পাশ করে সনদ নিতে হবে। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, এর আগে যদি কেউ ব্যারিস্টারি ডিগ্রি অর্জন করত, সে সরাসরি বাংলাদেশে আইন পেশায় নিয়োজিত হতে পারত। অর্থাৎ তাকে বার কাউন্সিলের পরীক্ষায় পাশ করে সনদ নেওয়ার প্রয়োজন হতো না। কিন্তু এখন সেই নিয়মের পরিবর্তন করা হয়েছে।

প্রযুক্তিগত বোকামি ও সাম্প্রদায়িক সংঘাত

  ইন্টারনেট ১৯৬৯ সালে আবিস্কৃত হয়। গত ১৯৯৫ সালে ইন্টারনেট বাণিজ্যিক বা কর্পোরেট পন্য হিসেবে আবির্ভূত হয়ে চলমান রয়েছে। গত ১৯৯০ দশকে টেলিফো...